Header Ads

JAHANARA HUQ MOHILA COLLEGE

জাহানারা হক মহিলা কলেজ

টেলিমেডিসিন কি। ইলেকট্রনিক হেলফ রেকর্ড কি বলতে কি বোঝ।

 

এই পাঠ শেষে যা যা শিখতে পারবে-  

১। চিকিৎসা ক্ষেত্রে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে পারবে।

২। টেলিমেডিসিন কি বুঝতে পারবে।

৩। ইলেকট্রনিক হেলথ রেকর্ড ব্যাখ্যা করতে পারবে।

চিকিৎসাঃ

অসুস্থ কোনো ব্যক্তি বা রোগীর সঠিক প্রক্রিয়ায় রোগ নির্ণয়, পাশাপাশি রোগ নির্ণয়ের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ব্যবস্থাপত্র প্রদন, যথা সম্ভব প্রয়োজনে অপারেশন ইত্যাদি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রোগীর রোগমুক্তির সার্বিক ব্যবস্থাকে চিকিৎসা বলে।

বিশ্বগ্রাম বা নেটওয়াকিং এই ব্যবস্থায় তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি নির্ভর চিকিৎসা সেবা বা চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন গবেষণা ও উদ্ভাবন মানব জাতিকে এনে দিয়েছে দীর্ঘ সুস্থ সুন্দর জীবন।

তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে চিকিৎসাক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। বর্তমানে রোগ নির্ণয় চিকিৎসা সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে কম্পিউটার দ্বারা রোগ নির্ণয় ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণের কাজ করলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। বিভিন্ন রোগের লক্ষণ বিভিন্ন রোগে রক্ত, মূত্র ইত্যাদির উপাদানের তারতম্য সম্বন্ধে সব তথ্য কম্পিউটারে রাখা হয়। রোগীর সব লক্ষণ রক্ত, মূত্র ইত্যাদি কম্পিউটারের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সম্ভাব্য রোগ বলে দেয়। তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্যে কোনো রোগীর বিভিন্ন সময়ে প্রাপ্ত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যাবলি ডেটাবেজে সংরক্ষণ করা হয়। সংরক্ষিত তথ্যাবলি বিশ্লেষণ করে রোগীর রোগ নির্ণয় সহজতর হয়।

বিশ্বগ্রামের এইরুপ ধারণায় বর্তমানে চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বা গ্রহনের জন্য কোনো ডাক্তার বা রোগীকে এখন আর গ্রাম থেকে শহরে কিংবা এক দেশ থেকে ভিন্ন দেশে যেতে হচ্ছে না। চিকিৎসক বিশ্বের যেকোনো স্থানে বসেই তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে দূরবর্তী অবস্থানের যেকোনো রোগীর রোগ নির্ণয় পাশাপাশি চিকিৎসা সেবা ও দিতে পারছে এবং তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি মাধ্যমে রোগী তা গ্রহণ করতে পারছে।  তার পাশাপাশি নতুন নতুন ঔষধের উদ্ভাবন এবং রোগ নিরাময়ের সর্বশেষ পদ্ধতি সম্পর্কে সবাই জেনে যাচ্ছে। শিশু মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় ত্রুটি নির্ণয় করে এবং প্রযুক্তি ও ঔষধ দ্বারা এসব ত্রুটি সংশোধন করা সম্ভব হচ্ছে। তাছাড়া ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে মানসিক রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এমনকি মানব জীননিয়ে গবেষণায় অনেক সাফল্য এসেছে।

টেলিমেডিসিন কী

তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্যে ভিন্ন ভিন্ন ভৌগলিক দূরুতে অবস্থানকরে রোগীকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা, রোগ নির্ণয় কেন্দ্র, বিশেষায়িত নেটওয়ার্ক তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক যন্ত্র ইত্যাদির সমন্বয়ে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়াকে টেলিমেডিসিন বলা হয়।

                         

টেলিমেডিসিন বলতে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে দূরবর্তী রোগীদেরকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দ্বারা চিকিৎসা সেবা দেওয়াকে বোঝায় পদ্ধতিতে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি তথা ইন্টারনেট, মোবাইল ওয়েব টেকনোলজি ব্যবহার করে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকেই ঘরে বসে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চিকিৎসা সেবা নেওয়া সম্ভব। এছাড়াও টেলিমেডিসিন সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট যেমন— Teladoc, Moven Clinic, Treatment online ইত্যাদি ব্যবহার করে বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে ঘরে বসেই অনলাইনে চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায়। পদ্ধতিতে -মেইলের মাধ্যমে পাঠানো রোগীর চিকিৎসা সংক্রান্ত পরীক্ষার রিপোর্ট ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করেও রোগ নির্ণয় সহজতর হচ্ছে। বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-19 এর প্রাদুর্ভাবের সময় বিশ্বের অনেক দেশেই টেলিমেডিসিন পদ্ধতিতে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা সম্ভব হয়েছে। কোভিড-19 এর ভ্যাকসিনের জন্য www.surokkha.gov.bd থেকে নিবন্ধন করা যায় এবং নিবন্ধন স্ট্যাটাস, টিকা কার্ড সংগ্রহ, টিকা সনদ সংগ্রহ, সচরাচর জিজ্ঞাসা-এর মত বিভিন্ন সুবিধা লাভ করা যায়


বর্তমান সমাজে মোবাইল চিকিৎসা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সুস্থ দেহ, প্রশান্ত মন, পাশে আছে স্বাস্থ্য বাতায়ন স্লোগান নিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে লোকজন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ১৬২৬৩ (হেলথ কল সেন্টার) বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইন ৩৩৩ নম্বরে ডায়াল করে দিন-রাত চব্বিশ ঘণ্টা চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করতে পারছে। বর্তমানে চিকিৎসা সেবা প্রদান বা গ্রহণের জন্য কোনো ডাক্তার বা রোগীকে এখন আর গ্রাম থেকে শহরে বা এক দেশ থেকে অনা দেশে যেতে হয় না। বর্তমান করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করাও সম্ভব হচ্ছে। বিশ্বের যেকোনো স্থানে বসেই যেকোনো চিকিৎসকের সেবা গ্রহণ সম্ভব। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে পাল্লা দিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশেও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ধীরে ধীরে টেলিমেডিসিন চিকিৎসা সেবা জনপ্রিয় হচ্ছে। ইতোমধ্যেই কিছু হাসপাতাল মোবাইল ফোন ও ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা শুরু হয়েছে। কম্পিউটারের মাধ্যমে রোগীর তথ্য চিকিৎসকের কাছে একটি বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে পাঠানো হয়। পরে ভিডিও কনফারেন্সে চিকিৎসকের সাথে রোগী কথা বলেন। এরপরই চিকিৎসক একটি ব্যবস্থাপত্র দেন। এই ডিজিটালাইজড্ পদ্ধতিতে প্রিন্ট এবং অনলাইন প্রেসক্রিপশন পাওয়া যায়। এছাড়া একটি ডেটাবেজে রোগীর আগের সকল তথ্য রাখা হয় যা ভবিষ্যতে রেফারেন্স হিসেবে কাজ করে । Digital Imaging and Communication on Telemedicine (DICOT) নামে একটি নতুন ধরনের যন্ত্র তৈরি করা হয়েছে যা Telemedicine Information Management and Education System (TIMES) সফটওয়্যারের সাহায্যে ব্যবহার করা হচ্ছে। এভাবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগী উপকৃত হতে পারেন ।



ইলেকট্রনিক হেলথ রেকর্ড:

ইলেকট্রনিক হেলথ রেকর্ড বা EHR হলো কোনো রোগী বা জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে নিয়মমাফিক সংগ্রহের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্যের সমাবেশ ইলেকট্রনিক হেলথ রেকর্ড বা EHR ব্যবস্থাপনায় ডেটাবেজে রোগীর সকল তথ্য সংরক্ষিত থাকে এবং রোগী তার EHR ব্যবহার করে যেকোনো স্থান হতে তার রোগ সম্পর্কিত তথ্য, রিপোর্ট, চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র ইত্যাদি পেতে পারেন ধরনের কাজ করতে যে সফটওয়্যার ব্যবহৃত হয় তার মধ্যে Therapy Notes, Epic Care, Next Gen Ambulatory EHR, Care 360 ইত্যাদি অন্যতম। বাংলাদেশের কয়েকটি আধুনিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাধারণত তাদের রোগীদের তথ্য সংরক্ষণ করে থাকে যেমন- স্কয়ার হসপিটাল, এভার কেয়ার হসপিটাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের একটি আইডি কার্ড রেজিস্ট্রেশন করে থাকে। রোগীদের আইডি নম্বরের বিপরীতে তার সকল তথ্য ডিজিটাল মাধ্যমে সংরক্ষণ করে। ইন্টারনেট মাধ্যমে রোগী যেকোনো জায়গা থেকে তার তথ্যাদির সত্যতা বৈধতা যাচাইপূর্বক আপডেট ব্যবহার করতে পারেন


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.