Header Ads

JAHANARA HUQ MOHILA COLLEGE

জাহানারা হক মহিলা কলেজ

এইচএসি প্রথম অধ্যায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ বিশ্বগ্রাম কি | বিশ্বগ্রামের সংজ্ঞা | বিশ্বগ্রামের উপাদান সমূহ আলোচানা |

 

এই পাঠ শেষে যা যা শিখতে পারবে- 

১।  বিশ্বগ্রামের ধারণা সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে পারবে।

২। বিশ্বগ্রাম বা গ্লোবাল ভিলেজ প্রতিষ্ঠার উপাদানসমূহের বিষয়ে ব্যাখ্যা করতে পারবে।

৩। বিশ্বগ্রাম ব্যবহারের ফলে সুবিধা অসুবিধাসমূহ ব্যাখ্যা করতে পারবে।

৪। বিশ্বগ্রামের ইতিবাচক ও নৈতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে পারবে। 

 বিশ্বগ্রাম কী? গ্লোবাল ভিলেজ কি ?

বিশ্বগ্রাম হচ্ছে এমন একটি অনুভব যেখানে পৃথিবীর সকল মানুষ একটি গ্রামে বসবাস করবে এবং স্বল্প বয়্যে স্বল্প খরচে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে একে অপরের সাথে যোগাযোগ সেবা প্রদান করবে। অর্থাৎ তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি নির্ভর সমাজ ব্যবস্থাকে বিশ্বকে বিশ্বগ্রাম বলা হয়।

এককথায় বলা যায় স্বল্প ব্যয়ে স্বল্প খরচে একস্থান থেকে অন্য দূরবর্তী স্থানে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তথ্য আদন প্রদান করার নির্ভর যোগ্য মাধ্যমকে বিশ্বগ্রাম বলে।প্রকৃতপক্ষে গ্রামীন জীবনধারায় মানুষের সাথে মানুষ সংযুক্ততাকে মাথায় রেখে এ নামকরণ “গ্লোভাল ভিলেজ” হয়েছে

তাই কবি বলেছেন-

                                    “আমাদের ছোট গায়ে ছোট ছোট ঘর

                                    থাকি সেথা সবে মিলে নাহি কেহ পর।”

বিশ্বগ্রাম এর জনক কে ?

কানাডার ঠরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ও বিখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী এবং দার্শনিক র্হাবার্ট মার্শাল ম্যাকলুহান ( Hebert Marchall Mcluhan) বিশ্বগ্রামের এই ধারণা ১৯৬২ সালে তার ‘The Gutenberg Galaxy’ বইয়ে উল্লেখ করেন এবং পরবর্তীতে ১৯৬৪ সালে Understanding Media তে  সর্বপ্রথম  বিশ্বগ্রাম বা গ্লোবাল ভিলেজ সম্পর্কে ধারনা দিয়েছিলেন । যা World Wide Web বা ইন্টারনেট আবিষ্কারের ৩০ বছর পূর্ববেই তিনি এ সম্পর্কে ধারনা দিয়েছেলেন। এই জন্য মার্শাল ম্যাকলুহানকে বিশ্বগ্রামের উদ্ভাবক বা জনক বলা হয়।


বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠার উপাদানসমূহ কী কী? বিশ্বগ্রামের মেরুদণ্ড কি?

হার্ডওয়্যারঃ বিশ্বগ্রামে যে কোন ধরণের যোগাযোগ এর জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত হার্ডওয়্যার। যেমন- কম্পিউটার, লেপটপ, আধুনিক প্রযুক্তির স্মাট ফোন, টেব এবং পেরিফেরাল যন্ত্রপাতি, রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদি।



সফটওয়্যারঃ কম্পিউটার বা কম্পিউটার সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি ডিভাইসকে সঠিক ভাবে পরিচালনা করার জন্য বা সচল রাখার জন্য যে প্রোগ্রাম ভাষা বা Application Software বা Apps ডিভাইসে স্থাপন Install করা হয় তাকে সাধারনত সফটওয়্যার বলা হয়। বিভিন্ন ধরণের সফটওয়্যার যেমন- ব্রাউজিং সফটওয়্যার গুগলক্রম ও মজিলা ফায়ারফক্স,উইনডোজ অপারেটিং সিস্টেম, কমিউনিকেশন সফটওয়্যার ফেসবুক, What’s App ইত্যাদি।





ডেটা বা ইনফরমেশনঃ ডেটা হচ্ছে তথ্যের উপাদান, যা মাধ্যমে একক কোনো ধারনা বুঝায়। সারাধারন ভাবে সুনির্দিষ্ট কোনো ফলাফল বা আউটপুট পাওয়ার জন্য প্রসেসিংয়ে বা প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত কাঁচামাল সমুহকে ডেটা বা উপাত্ত বলে। অপরদিকে ডেটা প্রক্রিয়াকরণ পরবর্তী অর্থপূর্ণ রূপ হলো ইনফরমেশন বা তথ্য। বিশ্বগ্রামে এই ডেটা বা ইনফরমেশন মানুষের প্রয়োজনে একে অপরের সাথে কথা বলে, ছবি পাঠিয়ে, টেক্সট লিখে শেয়ার করা হয়। এই অডিও, ভিডিও, ছবি, টেক্সট, ইত্যাদি কে ডেটা বলা হয়।

 মানুষের সক্ষমতাঃ যেহেতু বিশ্বগ্রাম এমন একটি তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবস্থা বা প্লাটফর্ম, তাই বিশ্বগ্রাম বাস্তবায়নের জন্য মানুষের সচেতনতা, জ্ঞান, দক্ষতা এবং তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির অবকাঠামো ব্যবহারের সক্ষমতা থাকতে হবে। অর্থাৎ তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির অবকাঠামো ব্যবহারের সঠিক জ্ঞান বা সক্ষমতা না থাকলে বিশ্বগ্রাম বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।

  

বিশ্বগ্রাম এর ইতিবাচক প্রভাব নেতিবাচক প্রভাব বিশ্বগ্রাম এর সুবিধা সমূহ

 ১। প্রযুক্তি নির্ভর পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের সাথে তাৎক্ষনিক যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে।

২। কাজের দক্ষতা ও গতি বৃদ্ধির পাশাপাশি সময়, অর্থ, ও শ্রমের অপচয় রোধ হচ্ছে।

৩।স্বল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বব্যাপী নিরাপদ দ্রুত যোগাযোগ করা যায়।

৪। সকল ধরনের ব্যবস্থাপনার ব্যয় কমে যাওয়ায় ই-গর্ভনেন্স বাস্তবায়ন সহজ হয়েছে।

৫। পৃথিবীব্যাপী তথ্যের ব্যাপক উৎস সৃষ্টি হয়েছে এবং তথ্য পাওয়া সহজলভ্য হয়েছে।

৬। প্রযুক্তি গ্রহণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে মানুষের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন হয়েছে পাশাপাশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংরক্ষিত হয়েছে।

৮। ব্যবসা বানিজ্যের প্রসার ঘটছে এবং লেনদেন ও সহজতর হচ্ছে।

৯। ঘরে বসে কেনা কাটা করা যায়।

১০। মানুষের কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

১১। ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার এবং লেনদেন সহজ দ্রুততর হচ্ছে।

১২। ঘরে বসেই শিক্ষা গ্রহণ করা যায়।

১৩। ঘরে বসেই উন্নত স্বাস্থ্য চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাচ্ছে।

১৪। অনলাইনে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে লেখালেখি করার মাধ্যমে কোন বিষয়ে মতামত প্রদান এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করা যাচ্ছে।

১৫। বিশ্বব্যাপী কর্মসংস্থানের ব্যপক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, পাশাপাশি ই-ব্যাংকিং সেবার সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। 

বিশ্বগ্রাম এর অসুবিধা সমূহ

১। ইন্টারনেট প্রযুক্তির ফলে অনেক ক্ষেত্রে তথ্যের গোপনীয়তা বা নিরাপত্তা বজায় থাকছে না।

২। বিশ্বগ্রাম স্থাপনের ফলে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে সহজেই যেকোন ভাল বা খাপার তথ্য ও সহজে ভাইরাল হয়ে যায়।

৩। বিশ্বগ্রাম স্থাপনে সহজেই অসত্য বা মিথ্যা এবং বানোয়াট সংবাদ ছড়িয়ে সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে।

৪। প্রযুক্তি পরিবর্তনের কারণে গ্লোবাল নেটওয়ার্ক শেয়ার করার জন্য অনুন্নত দেশগুলো উন্নত দেশগুলোর প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে।

৫। সাইবার আক্রমন বাড়ছে।

৬। ইন্টারনেটের ফলে পর্ণোগ্রাফি সহজলভ্য হওয়ায় যুবসমাজে সামাজিক অবক্ষয় সৃষ্টি হচ্ছে।

৭। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে ফলে মানুষ বিভিন্ন প্রতারকের প্রতারনার শিকার হচ্ছে। 

বিশ্বগ্রামের ধারণা সংশ্লিষ্ট প্রধান উপাদানসমূহ

১। যোগাযোগ (Communication)

২। কর্মসংস্থান (Employment)

৩। শিক্ষা (Education)

৪। চিকিৎসা (Treatment)

৫। গবেষণা (Research)

৬। অফিস (Office)

৭। বাসস্থান (Residence)

৮। ব্যবসায় বাণিজ্য (Business)

৯। বিনোদন সামাজিক যোগাযোগ (Entertainment and Social Communication)

১০। সংবাদ (News)

১১। সাংস্কৃতিক বিনিময় (Cultural Exchange)






কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.