Header Ads

JAHANARA HUQ MOHILA COLLEGE

জাহানারা হক মহিলা কলেজ

বিনোদন ও সামাজিক যোগাযোগ (Entertainment & Social)। আইপি (IP) টিভি। টুইটার (Twitter)। ফেসবুক (Facebook)। স্কাইপি (Shype)। ইউটিউব (YouTube)। ইন্সটাগ্রাম (Instagramm)। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা কর।

 



বিনোদন সামাজিক যোগাযোগ (Entertainment & Social)

বিনোদন (Entertainment) :

 মাল্টিমিডিয়া কম্পিউটারের বদৌলতে বিনোদনের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন ঘটেছে। 2D এর পর 3D- প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিনোদনকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা হচ্ছে। বিনোদনে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

Ø   ছবি দেখা বা গান শোনার জন্য আজকাল অনেকেই টেলিভিশন বা ক্যাসেট প্লেয়ারের বিকল্প হিসেবে কম্পিউটার, স্মার্ট ফোন, আইফোন প্রভৃতি ব্যবহার করছে

Ø    ইন্টারনেটে ইউটিউব (Youtube) এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের মুভি ভিডিও সহজেই দেখা ডাউনলোড করা যায় তাছাড়া কখন কোথায় কোন নতুন মুভি মুক্তি পাচ্ছে, মুভির গল্প, অভিনেতা অভিনেত্রীর পরিচয় ইত্যাদি ইন্টারনেট থেকে সহজেই জানা যায়।

Ø  কম্পিউটার বা স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে ইচ্ছানুযায়ী ছবি আঁকা সম্ভব। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা ছবি আঁকতে কম্পিউটারের সহযোগিতা নিয়ে থাকে

Ø  আজকাল অনেকেই অনলাইনে রেডিও, টেলিভিশন, সিনেমা, ম্যাগাজিন ইত্যাদি থেকে বিনোদন গ্রহণ করে থাকে

Ø  বিভিন্ন ধরনের গেমসের বিশাল স্টোরেজ রয়েছে ইন্টারনেটে। সকল গেম অনলাইনের মাধ্যমে দূরবর্তী স্থানে অবস্থান করেও একাধিক খেলোয়াড় একত্রে খেলতে পারেন। তাছাড়া বিভিন্ন খেলাধুলার তাৎক্ষণিক আপডেট বা সরাসরি খেলা দেখার সুযোগও ইন্টারনেটে রয়েছে।

আইপি (IP) টিভি : ইন্টারনেট প্রটোকল টেলিভিশন বা আইপিটিডি (Internet Protocol Television IPTV) হলো ইন্টারনেট প্রটোকল (IP) ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপি প্রচারিত বিভিন্ন টিভি চ্যানেল। অর্থাৎ আইপিটিভি এমন এক সিস্টেম, যা দিয়ে ইন্টারনেটে টেলিভিশন সার্ভিস পাওয়া যায়। তবে আইপিটিভির সার্ভিসগুলো সাধারণত অর্থের বিনিময়ে গ্রহণ করতে হয়। আইপিটিভির সাহায্যে লাইভ টিভি দেখার পাশাপাশি রেকর্ড করে রাখা অন্য প্রোগ্রামও দেখা যাবে, টাইম শিফট করা প্রোগ্রাম দেখা যাবে, যেকোনো প্রোগ্রাম আবার প্রথম থেকে চালু করে দেখা যাবে, ফরোয়ার্ড বা রিওয়াইনড করেও প্রোগ্রামকে দেখা যাবে এবং ভিডিও অন ডিমান্ড পদ্ধতিতে ক্যাটালগ থেকে বেছে পছন্দসই ভিডিও দেখা যাবে। কোনো রকম ভিডিও ট্রান্সমিটার কিংবা নিজস্ব স্যাটেলাইট সিস্টেম স্থাপন ছাড়াই কোনো মাইএসপির কাছ থেকে ইন্টারনেট সংযোগ নিয়েই ধরনের টিভি স্টেশন পরিচালনা করা যায়। প্রযুক্তির টিভি ওয়েব টিভি নামেও পরিচিত।

সামাজিক যোগাযোগ (Social Communication) : সামাজিকভাবে বিভিন্ন মাধ্যমের সাহায্যে মতামত বিনিময়, তথ্যের আদান-প্রদান বা আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থাকে সামাজিক যোগাযোগ বলে। সময়ের সাথে সাথে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থাও পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। টেলিফোন, ম্যাসেঞ্জারের যুগ পেরিয়ে এখন সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলোর প্রতি মানুষ আকৃষ্ট হচ্ছে। এখানেই আমরা আমাদের বন্ধুদের জানাই কোথায় আছি, কী করছি, চাকরির খরব, পরীক্ষার খবর, ফলাফল ধরনের সবকিছু। আপডেট পোস্ট করি বিভিন্ন সামগ্রিক ইভেন্টের উপর এবং ভালো লাগা বিভিন্ন অ্যাটিক্যাল শেয়ার করি।

বর্তমানে ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী কম খরচে এবং দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ রক্ষা করা যায়। তরুণ-তরুণী থেকে বয়স্ক ব্যক্তি পর্যন্ত এসব সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করছেন। এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করছে। এতে আপলোড ডাউনলোডের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য, ছবি, ভিডিও, সংবাদ ইত্যাদি শেয়ার করা যায়। যদিও এতে অনেক সময় অনেকে প্রতারণার শিকার হয়ে থাকেন। অনেকের ব্যক্তিগত তথ্য হ্যাক বা চুরি হয়ে যায়, যা বেশ ক্ষতিকর। ফেসবুক, -মেইল, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম, হোয়াটস অ্যাপ, ইউটিউব, ভাইবার, ইমো, গুগল প্লাস, স্কাইপি, Google Doc বা Drive, Hangouts WeChat Line, BBM (Black Berry Messenger), Telegram Messenger Snapchat, KIK ইত্যাদি অন্যতম সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম। সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে কয়েকটি বহুল ব্যবহৃত পরিসেবার বর্ণনা নিচে দেওয়া হলো-

টুইটার (Twitter): এটি মাইক্রোসফটের একটি ওয়েবসাইট যার মাধ্যমে সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ করা যায়। এখানে ব্যবহারকারীরা সর্বোচ্চ ২৮০ অক্ষরের বার্তা আদান-প্রদান প্রকাশ করতে পারেন। এই বার্তাকে টুইই বলা হয়। টুইটার সদস্যদের টুইট বার্তাগুলো তাদের প্রোফাইল পাতায় দেখা যায়। টুইটারের সদস্যরা অন্য সদস্যদের টুইটটি পড়ার জন্য নিবন্ধন করতে পারেন। টুইট লিখার জন্য সদস্যরা সরাসরি টুইটার ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়াও মোবাইল ফোন বা এসএমএস এর মাধ্যমেও টুইট লেখার সুযোগ রয়েছে। জ্যাক জোরসে, ইভান উইলিয়ামস, নোয়া গ্লাস বিজ স্টোন সম্মিলিতভাবে টুইটার আবিষ্কার করেন।

ফেসবুক (Facebook): বিশ্ব সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট, যা ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কোনো রকম খরচ ছাড়া এতে সদস্য হওয়া যায়। মার্ক জাকারবার্গ (Mark Zuckerberg) ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা এবং নির্বাহী পরিচালক। ব্যবহারকারিগণ ভিডিও কনফারেন্সিং, বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ এর মাধ্যমে তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলি হালনাগাদ করতে এবং তথ্য আদান-প্রদান করতে পারেন।

স্কাইপি (Shype): Sky এবং peer থেকে Skype শব্দটির উৎপত্তি। বিশ্ব-সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট, যার সাহায্যে ফ্রি ভিডিও কনফারেন্সিং করা যায়। তবে স্বল্প ব্যয়ে মোবাইল ফোনে কথাও বলা যায়। স্কাইপি ব্যবহারের জন্য সদস্যরা সরাসরি ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারে। তাছাড়াও মোবাইল ফোন বা এসএমএস এর মাধ্যমেও স্কাইপি ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে ফেসবুক এটা কিনে নিয়েছে। ফেসবুক ব্যবহারকারীরা অতি সহজেই স্কাইপি ব্যবহার করতে পারেন।

ইউটিউব (YouTube): সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ভিডিও শেয়ারিং পরিসেবা। এখানে ব্যবহারকারীরা ভিডিও আপলোড ডাঊনলোড করতে পারেন। সদস্যদের ভিডিও বার্তাগুলো তাদের প্রোফাইল পাতায় দেখা যায়। সদস্যরা অন্য সদস্যদের ভিডিও শেয়ারিং করার জন্য নিবন্ধন করতে পারেন। জাবেদ করিম (বাংলাদেশী), চ্যাড হারলি স্টিভ চ্যান সম্মিলিতভাবে ইউটিউব আবিষ্কার করেন।

ইন্সটাগ্রাম (Instagramm): ইন্সটাগ্রাম হলো অনলাইন ফটো শেয়ারিং, ভিডিও শেয়ারিং এবং সামাজিক নেটওয়ার্কিং পরিসেবা। এর মাধ্যমে ছবি এবং ১৫ সেকেন্ডের দৈর্ঘ্যের ভিডিও আপলোড করা যায়। প্রতিদিন ৩০০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ইন্সটাগ্রাম ব্যবহার করে। ইন্সটাগ্রামের মূল উদ্ভাবক হলেন কেভিন সাইস্ট্রম মাইক ক্রিপ্তার এবং উন্নয়নকারী হলো ফেসবুক।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুবিধা অসুবিধা আলোচনা করা হলো :

সুবিধা: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর বহুবিধ সুবিধা রয়েছে। যেমন -

. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ভৌগোলিক দূরত্বের বাধাকে অতিক্রম করে মানুষকে খুব কাছাকাছি নিয়ে এসেছে।

২. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর সাহায্যে যেকোনো ব্যক্তি তার নিজস্ব অভিরুচি বা পছন্দ-অপছন্দের সাথে মিল রয়েছে এমন মানুষগুলোকে খুঁজে পেতে পারে বা সমচিন্তা-ভাবনা সম্পন্ন মানুষদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে।

৩. ভালো লেখক তৈরিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে।

৪. যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ চাঞ্চল্যকর সংবাদ দ্রুত ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে সামাজিক আন্দোলন তৈরি করা যায়।

. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষ তাদের পণ্য সামগ্রী নিজেদের সম্পর্কে ব্যাপকভাবে প্রচার বিপণন কার্যক্রম চালাতে সক্ষম হন, যা পূর্বে কল্পনাও করা যেত না।

. অপরাধী শনাক্তকরণে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা করতে মাধ্যমগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

অসুবিধা: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুবিধার পাশাপাশি বেশ কিছু অসুবিধাও রয়েছে। যেমন

. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহারে নৈতিক অবক্ষয় সামাজিক বিপর্যয় ঘটছে।

. মাধ্যমগুলো সহজে ব্যবহার করা যায় বিধায় বিভিন্ন ধরনের অপরাধীচক্র সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।

৩. এসব মাধ্যমে কুচক্রী মহল নানা সময় মিথ্যা তথ্য প্রচার করে, যা সমাজে দাঙ্গা-ফ্যাসাদ তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।

8. এসব মাধ্যমের অপব্যবহারে ইদানিং সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া নিত্তনৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

. এসব মাধ্যম ইদানিং স্কুল, কলেজ, বাড়ি কর্মক্ষেত্রে প্রধান সময় অপচয়কারী হয়ে উঠছে। ফলে মানুষ আক্ষরিক অর্থে সমাজ হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে।


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.