রোবটের বৈশিষ্ট্য
বা
সুবিধা
সমূহ :
- 1. রোবট এমন একটি যান্ত্রিক পদ্ধতি, যা পূর্বে দেওয়া নির্দেশমতো কাজ করতে পারে ।
- 2. রোবট সফটওয়্যার নিয়ন্ত্রিত যা নির্দিষ্ট কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারে ।
- 3. রোবটের পরিবেশ অনুভব করার ক্ষমতা আছে এবং পরিবেশের বস্তু নিয়ে কাজ করতে পারে।
- 4. রোবট অত্যন্ত দ্রুত ও নিখুঁতভাবে কাজ করে এবং ঘুরতে ও স্থানান্তর করতে পারে ।
- 5. কিছুটা বুদ্ধিমত্তা আছে, যার সাহায্যে পরিবেশ বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
- 6. দূর থেকে লেজার রশ্মি বা রেডিও সিগন্যালের সাহায্যে নিয়ন্ত্রিত হয় ।
- 7. রোবট পূর্ব থেকে দেওয়া নির্দেশমতো কাজ করে ।
- 8. স্বেচ্ছায় কাজ করছে এমন আভাস দিতে পারে ।
- 9. দক্ষভাবে সুনিয়ন্ত্রিত চলন প্রদর্শন করতে পারে ।
- ১০ কম্পিউটারের মাধ্যমে প্রোগ্রামযোগ্য ।
রোবটের অসুবিধা
:
2. ভুল সংশোধন বা ভুল থেকে শিক্ষা নিতে পারে না ।
3. জটিল পরিস্থিতিতে নিজে নিজে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
4. রোবট সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতির দাম অধিক ।
5. রোবটের ব্যাপক ব্যবহারে কর্মীদের কাজের ক্ষেত্র কমে যেতে পারে ।
6. কৃত্রিম হওয়ায় রোবট পরিচালনার জন্য দক্ষ জনবলের প্রয়োজন হয় ।
রোবটের
উপাদানসমূহ
(Components of Robot) : একটি রোবটের
উল্লেখযোগ্য
উপাদানসমূহ
হলো-
১. পাওয়ার সিস্টেম
রোবটের পাওয়ার এর জন্য সাধারণত
লেড এসিড দিয়ে রিচার্জেবল ব্যাটারি তৈরি হয়।
২. ইলেকট্রিক সার্কিট
হাইড্রোলিক ও নিউমেট্রিক সিস্টেমের
রোবটকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়।
৩. ঘূর্ণায়মান বড়ি
রোবটে চাকা, যান্ত্রিক পা এবং স্থানান্তর
করা যায় এমন যন্ত্রপাতি যুক্ত থাকে।
৪. একচুয়েটর : রোবটের
হাত-পা নড়াচাড়া করার
জন্য কতকগুলো বৈদ্যুতিক মোটরের সাহায্য নেওয়া হয়। এগুলো হাত ও পায়ের পেশির মতো কাজ করে ।
৫. মস্তিষ্ক বা
প্রসেসর রোবটের মস্তিষ্ক রোবটকে নিয়ন্ত্রণ করে। বিভিন্ন ধরনের কলা-কৌশল ও আচরণের কারণে
মস্তিষ্কে প্রোগ্রাম দিতে হয় ।
৬. ম্যানিপুলেশন : একটি
রোবটের আশেপাশের বস্তুগুলোর অবস্থান পরিবর্তন করা হলো ম্যানিউপুলেশন। হাত বা পায়ের আঙ্গুল
নাড়াচাড়া করে কোনো অংশকে ধরতে ব্যবহৃত হয়।
৭. অনুভূতি : রোবটের অনুভূতির জন্য হাত বা পায়ের কোনো জায়গায় স্পর্শ করলে সে জায়গা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য নেওয়ার ক্ষমতা থাকে ।
রোবটের
ব্যবহার
: বর্তমানে
রোবট বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে। যদিও রোবট ব্যবহার করে কাজ করানো ব্যয়বহুল তবুও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে এবং উন্নত দেশে এটির ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
1.
ওয়েল্ডিং ও ঢালাই কাজে দক্ষ শ্রমিক হিসেবে রোবটের ব্যবহার অত্যন্ত ফলপ্রসূ।
2.
ভারি মালামাল উঠা-নামা করাতে ও ভারি যন্ত্রাংশ সংযোজনে রোবট বর্তমানে ব্যাপকহারে ব্যবহৃত হচ্ছে।
3.
নিখুঁতভাবে পাড়ি রং করতে, গাড়ি চালনা ও স্যাটেলাইট স্থাপনে রোবট সফলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
4.
নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টরসহ বিভিন্ন বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে রোৰ্ট ব্যবহার করা হয় ।
5.
কম্পিউটারের মাদারবোর্ডসহ অন্যান্য সার্কিটবোর্ড তৈরির ক্ষেত্রে রোবটের ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়।
6.
শিল্প কারখানায় পণ্য উৎপাদনে, প্যাকিং ও সংযোজনে রোবট সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।
7. চিকিৎসাক্ষেত্রে রোগ নির্ণয় ও সার্জারির কাজে রোবটের সফল ব্যবহার সম্ভব হয়েছে।
8.
বাসা-বাড়িতে কাজের লোকের বিকল্প হিসেবেও ইদানিং রোবটের ব্যবহার পরিলক্ষিত হচ্ছে।
9.
শিক্ষা, গবেষণা ও বিনোদনের ক্ষেত্রে রোবট ব্যবহৃত হচ্ছে।
10.
যুদ্ধক্ষেত্রে সৈনিক হিসেবে, পাইলট/ড্রাইভারের বিকল্প হিসেবে রোবট ব্যবহার করা যায়।
11.
উন্নতমানের হোটেলগুলোতে ওয়েটারের বিকল্প হিসেবে রোবট ব্যবহৃত হচ্ছে ।
12.
কারখানায় বিপজ্জনক কাজে, দুর্গম স্থানে কাজের ক্ষেত্রে রোবট ব্যবহৃত হচ্ছে।
13. ইদানিং মহাকাশ গবেষণায় মানুষের পরিবর্তে রোবট ব্যবহৃত হচ্ছে।
রোবট
সোফিয়া
(Sophia) :
সোফিয়া হচ্ছে একটি সামাজিক বোবট, যার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা রয়েছে। এ রোবটটি মানুষের মতো দেখতে এবং মানুষের ব্যবহারের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে ও শিখতে পারে এবং মানুষের সাথে কথা বলতে, ভাব বিনিময় করে কাজ করতে পারে। হংকং ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হ্যানসন রোবটিক্স এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ডেভিড হ্যানসন এ রোবট তৈরি করেন । সোফিয়া হলো প্রথম রোবট যেটি সৌদি আরব থেকে প্রথম নাগরিকত্ব লাভ করে । সোফিয়ার শরীরে আছে অনেক ছোট ছোট সেন্সর, ক্যামেরা, চিপ। মাইক্রোচিপে যে প্রোগ্রাম করা হয় সেটাই তার চালিকাশক্তি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রোগ্রাম এমনভাবে কোড করা হয়েছে যাতে সে শব্দ ও বাক্য বিশ্লেষণ করে নিজের তথ্য ভাঙার থেকে শব্দ নিয়ে বাক্য বানিয়ে বলতে পারে। এটি ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত থাকে। ক্লাউড প্রযুক্তি ব্যবহার করে সে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে এবং তার কন্ঠস্বরে রূপান্তর করে কথা বলে ।
রোবট
কীভাবে
কাজ
করে
:
সাধারণত যেকোনো রোবটেই কন্ট্রোল সিস্টেম হিসেবে মাইক্রোকন্ট্রোলার বা মাইক্রোপ্রসেসর ব্যবহার করা হয়। এছাড়া চারপাশের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করার জন্য এবং নির্দিষ্ট কিছু বিষয় বিবেচনা করার জন্য বিভিন্ন ধরনের সেন্সর ব্যবহার করা হয় । বাহ্যিক পরিবেশ থেকে প্রাপ্ত অ্যানালগ সিগন্যালকে ডিজিটাল সিগন্যালে রূপান্তর করার জন্য A/D কনভার্টার ব্যবহার করা হয়। কারণ মাইক্রোকন্ট্রোলার বা মাইক্রোপ্রসেসর শুধুমাত্র ডিজিটাল সিগন্যাল প্রসেস করতে পারে । একইভাবে প্রসেসিং শেষে অ্যানালগ ডিভাইসকে পরিচালনার জন্য সিগন্যাল তৈরি করতে D/A কনভার্টার ব্যবহার করা হয়। কোন কাজ কখন করতে হবে তার জন্য সময় নিয়ন্ত্রণের জন্য টাইমার কাউন্টার থাকে। বিভিন্ন চলাফেরা ও অবস্থানের জন্য মটর।
কোন মন্তব্য নেই